একবার নয়, পরপর দুবার আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। প্রথমবার ক্ষমা করার সময় বলা হয়েছিল, ভবিষ্যতে দলের শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজ করলে তা ক্ষমার অযোগ্য বলে বিবেচনা করা হবে। কিন্তু দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমা পেলেন জাহাঙ্গীর আলম। এবারও একই কথা বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে তা ক্ষমার অযোগ্য বলে বিবেচনা করা হবে।
আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র বলছে, জাহাঙ্গীর শুধু ক্ষমাই পাননি, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের স্বপ্নও দেখছেন। এখনই না হলেও ভোটের পর তাঁকে দলীয় পদে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আলোচনা চলছে।
বিএনপিসহ বিভিন্ন দল ও জোটের সরকারবিরোধী আন্দোলন ও আগামী নির্বাচন মাথায় রেখে জাহাঙ্গীর আলমকে ক্ষমা করা হয়েছে বলে দলটির একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা জানিয়েছেন। দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে বিভিন্ন পর্যায়ে নির্বাচনে অংশ নিয়ে যাঁরা দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন, তাঁদের অনেকে সাম্প্রতিক সময়ে দলে ফিরে এসেছেন।
তবে দলে ফেরার অপেক্ষায় থাকা নেতাদের কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন, তাঁরা দলের প্রভাবশালীদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক করতে না পারায় দলে ফিরতে পারছেন না। সেখানে ব্যতিক্রম হলো জাহাঙ্গীর আলমের ক্ষেত্রে, তিনি দ্বিতীয় দফায় বহিষ্কৃত হওয়ার পরও দলে ফেরার সুযোগ পেলেন।
আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্রগুলো অবশ্য বলছে, বিএনপি ও তার মিত্রদের এখন সরকারের পদত্যাগের দাবিতে এক দফার আন্দোলন চলছে। ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ আছে বিএনপির। আওয়ামী লীগও পাল্টা সমাবেশ করবে। এ পরিস্থিতিতে ঢাকার অন্যতম প্রবেশমুখ গাজীপুরের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে জাহাঙ্গীরকে প্রয়োজন বলে দলের নীতিনির্ধারকদের কেউ কেউ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাকে বুঝিয়েছেন। দলীয় প্রধানের সবুজসংকেত পেয়ে গতকাল শনিবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দ্বিতীয়বার জাহাঙ্গীর আলমকে ক্ষমা করার চিঠি দেন।
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম প্রথম আলোকে বলেন, জাহাঙ্গীরের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে ক্ষমা করা হয়েছে। তবে ভবিষ্যতে একই অপরাধ যাতে না করেন, সেই শর্ত দেওয়া হয়েছে।
জাহাঙ্গীর আলম প্রথম ২০২১ সালে বহিষ্কার হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও গাজীপুর জেলার কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করে। গত ২১ জানুয়ারিতে তাঁকে ক্ষমা ঘোষণা করা হয়। এর চার মাসের মধ্যে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নিজের মা জায়েদা খাতুনকে বিদ্রোহী প্রার্থী করে পুনরায় বহিষ্কার হন। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ছিলেন আজমত উল্লা খান। তাঁকে হারিয়ে জায়েদা খাতুন মেয়র নির্বাচিত হন।