কলকাতা প্রতিনিধি : সমরেশ রায় ও শম্পা দাস

কলকাতা শহরের পরুই দাসপাড়া রোডের তিনমাথা মোড়ে অবস্থিত ‘পরুই অগ্রদূত সংঘ’-এর ৭২তম বর্ষের কালী প্রতিমার আবরণ উন্মোচন অনুষ্ঠিত হয়েছে রবিবার (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যা আটটায়। আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিমার আবরণ উন্মোচন করেন বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা সরকার।

প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও ফিতা কেটে প্রতিমা উন্মোচনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপর অতিথিদের মঞ্চে আমন্ত্রণ জানিয়ে একে একে উত্তরীয়, ব্যাজ ও পুষ্পস্তবক দিয়ে সংবর্ধনা জানানো হয়।

উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সমাজকর্মীরা

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ১২৮ নম্বর ওয়ার্ডের পৌর প্রতিনিধি ও ক্লাব সভাপতি শ্রী পার্থ সরকার (ভজা দা), আইনজীবী শীর্ষেন্দু চ্যাটার্জী, মহিলা সভানেত্রী অস্মিতা বোস, দিব্যেন্দু চ্যাটার্জীসহ ক্লাবের সদস্য ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

সভায় বক্তারা বলেন, ক্লাবটি শুধু পুজো আয়োজনেই সীমাবদ্ধ নয়; সারা বছর জুড়ে তারা নানা সামাজিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকেন— যেমন রক্তদান কর্মসূচি, ফ্রি হেলথ চেকআপ ক্যাম্প, বস্ত্র বিতরণ, এবং বন্যা দুর্গতদের সহযোগিতা।

প্রিয়াঙ্কা সরকারের অভিভূত প্রতিক্রিয়া

প্রতিমা উন্মোচন শেষে অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা সরকার বলেন,

“আমি সত্যিই অভিভূত। এই এলাকায় এসে বুঝলাম মহিলারা কতটা সক্রিয়ভাবে উৎসবের সঙ্গে যুক্ত। সবাইকে বলব— দীপাবলীর আনন্দে মেতে উঠুন, কিন্তু আনন্দ যেন কারও কষ্টের কারণ না হয়।”

‘মহিলারা আমাদের শক্তি’— উদ্যোক্তার বক্তব্য

ক্লাবের উদ্যোক্তা জানান,

“দেখতে দেখতে আমাদের পুজো ৭২ বছরে পদার্পণ করল। মহিলাদের সহযোগিতা ছাড়া এটি সম্ভব হত না। আমাদের পুজোয় যেমন পুরুষরা কাজ করেন, তেমনই মহিলারাও সব দায়িত্ব ভাগ করে নেন। তাঁরা প্রকৃত অর্থে দশভূজা।”

তিনি আরও বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে মহিলারা সমাজে এগিয়ে চলেছেন— “আমরা সেই দর্শনকেই অনুসরণ করি,” যোগ করেন উদ্যোক্তা।

আসছে নানা সাংস্কৃতিক আয়োজন

পুজো উপলক্ষে কয়েকদিন ধরে চলবে ভোগ বিতরণ, ম্যাজিক শো, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বস্ত্র বিতরণসহ নানা কর্মসূচি। উদ্যোক্তা জানান, প্রতি বছরই দর্শকদের আনন্দ দিতে চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন অঙ্গনের জনপ্রিয় তারকাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়।

অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী পুজো

পরুই অগ্রদূত সংঘের কালীপুজো স্থানীয়ভাবে অন্যতম ঐতিহ্যবাহী পুজো হিসেবে পরিচিত। ক্লাবের দাবি, তাদের প্রতিমা প্রতিবছর একই স্থায়ী বেদীতে প্রতিষ্ঠিত হয়, থিম ও প্যান্ডেলে থাকে নবত্বের ছোঁয়া।

উদ্যোক্তারা বলেন, “এলাকাবাসী, ক্লাবের সদস্য ও বিজ্ঞাপনদাতাদের সহযোগিতাতেই আমাদের এই দীর্ঘ পথচলা। শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রেখে যেন সবাই আনন্দ করতে পারেন, সেটাই আমাদের কামনা।”