
মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার চিত্রকোর্ট এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে একটি সংঘবদ্ধ অপরাধীচক্র মাদক ব্যবসা, ভূমিদস্যুতা, চুরি, ডাকাতি, নারী নির্যাতন, জাল দলিল সৃষ্টি, জুয়া ও পতিতাবৃত্তির মতো নানামুখী অপরাধে জড়িয়ে রয়েছে—এমন অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে। অভিযোগ রয়েছে, এসব কার্যক্রমে শেখরনগর ফাঁড়ির কয়েকজন পুলিশ সদস্যের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে, যার কারণে অপরাধ চক্রটি আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রের দাবি, গ্রিনগর, খারশুর ও আশপাশের এলাকায় কয়েকটি বাড়ি, অফিস ও বাগানকে কেন্দ্র করে নিয়মিত মদ–ইয়াবার আসর বসে। সেখানে কিছু পুলিশ সদস্যের উপস্থিতির অভিযোগও উঠেছে। এসব স্পট থেকে নাকি নিয়মিত মাসোহারা নেন দায়িত্বপ্রাপ্ত কিছু কর্মকর্তা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশের বিভিন্ন জায়গায় মাদকের প্রাপ্যতা বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি এ অঞ্চলেও ইয়াবা, হেরোইনসহ নেশাজাতীয় দ্রব্যের ব্যবসা ফুলেফেঁপে উঠেছে। বিশেষ করে চিত্রকোর্ট ইউনিয়নের খারশুর এলাকাকে ঘিরে ভয়ানক ইয়াবা সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে, যারা নেশা ব্যবসার পাশাপাশি নানা অপরাধে জড়িত।
এ চক্রের সঙ্গে জড়িত হিসেবে স্থানীয়রা কয়েকজনের নাম উল্লেখ করেছেন। তাদের মধ্যে আছেন—মোয়াজ্জেমপন্থী শহিদুল ইসলাম উজ্জ্বল (৫০), প্রদীপ সরকার প্রবীর (৪৬), জীবন (৫০), সজিব মেম্বার ও তার ভাই প্রদীপ, সুরুজ (৫০), নুর জামাল (৪৮), জহর আলী (৫০), ইসমাইল (৪০), অমল রায় (৫০), চিত্তরঞ্জন বিশ্বাস (৬০), জয় মণ্ডল (২৫) প্রমুখ। অভিযোগ অনুযায়ী, তারা কেউ মাদক ব্যবসা, কেউ ভূমি দখল, কেউ আবার নারী নির্যাতন ও ডাকাতির সঙ্গে যুক্ত।জগন্নাথপুরে ইয়াবা সহ মাদক ব্যবসায়ী ও দুই পলাতক আসামী গ্রেপ্তার
গত ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ রাত ৮টার দিকে খারশুর তালতলায় এক গৃহবধূকে আটকে তার স্বর্ণালংকার লুট ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ পাওয়া যায়। ভুক্তভোগী পরিবার প্রভাবশালী মহলের ভয় ও হুমকির কারণে প্রকাশ্যে অভিযোগ করতে রাজি হননি।
এ ছাড়া জাল দলিল তৈরি করে কৃষিজমি দখল, মন্দিরে মামলার আসামিদের অব্যাহতি, রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়া—সব মিলিয়ে দীর্ঘদিন ধরে এলাকা জুড়ে ভয়ংকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয়রা।
তাদের আরও অভিযোগ, কিছু অসাধু পুলিশ কর্মকর্তা উদ্ধার করা মাদকের একটি অংশ পুনরায় বাজারে বিক্রি করে দেন, কেউ আবার সোর্সের মাধ্যমে বা সরাসরি মাদক ব্যবসায় যুক্ত থাকেন। এছাড়া অনেক সাধারণ মানুষকে পকেটে ইয়াবা গুঁজে দিয়ে মামলা করার হুমকি দিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগও রয়েছে।
এ বিষয়ে শেখরনগর ফাঁড়ির ইনচার্জ মোঃ তাজুল ইসলাম জানান,
“অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।