
বুলবুল আহমেদ, নবীগঞ্জ(হবিগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় সারাদেশে যে টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা ও খাল পুনঃখনন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে, তারই অংশ হিসেবে দীঘলবাক ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের দীর্ঘদিনের অবহেলিত খালগুলো পুনঃখননের উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা রাখার পাশাপাশি নিরাপদ পানির সরবরাহ নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই প্রয়োজন বিবেচনা করে এলজিইডির মাধ্যমে নবীগঞ্জের দরবেশপুর, দাউদপুর, বোয়ালজুর, কারখানা ও বহরমপুর এলাকার প্রাচীন খালগুলো পুনঃখননের লক্ষ্যে প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়।
প্রকল্পটি পর্যালোচনা ও অনুমোদনের আগে মাঠ পর্যায়ের পরিস্থিতি যাচাই করতে সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে এলজিইডি মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিনিধি দল সরেজমিনে পরিদর্শন করে। তারা হাকানী খাল হয়ে বোয়ালজুর, কারখানা ও বহরমপুর গ্রামের পশ্চিম পাশে বিস্তৃত খালগুলোর বর্তমান অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন। জলবায়ু ও দুর্যোগ সহনশীল ক্ষুদ্রাকার পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় এই খালগুলো পুনঃখনন করা হলে এলাকাবাসীর বহু দিনের সমস্যা দূর হওয়ার পাশাপাশি কৃষি, মৎস্যচাষ ও পরিবেশ ব্যবস্থাপনায় ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।
আরোও পড়ুন - নওগাঁয় তথ্য অধিকার আইন অবজ্ঞার অভিযোগে ৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সাংবাদিকের আপিল আবেদন
পরিদর্শনে অংশ নেওয়া বিশেষজ্ঞরা জানান, স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দাবির ভিত্তিতে খালগুলো পুনরুজ্জীবিত হলে বৃষ্টির পানি ধারণ, সেচ ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন, পানির প্রবাহ স্বাভাবিক করা এবং জলাবদ্ধতা কমাতে তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। প্রতিনিধি দল এলাকাবাসীর দাবি ও প্রকল্পটির প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে একমত হয়ে বাস্তবায়নের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করে।
এলাকার বাসিন্দারা জানায়, বহু বছর ধরে খালগুলো অযত্নে অবহেলায় ভরাট হয়ে যাওয়ায় কৃষিকাজে ব্যাপক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিনিয়ত জলাবদ্ধতা ও পানি সংকট মোকাবিলা করতে হচ্ছে। প্রকল্পটি অনুমোদন পেলে উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু হওয়া মাত্রই তাদের প্রত্যাশার নতুন দ্বার উন্মোচন হবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সরেজমিনে উপস্থিত ছিলেন পানি বিশেষজ্ঞ ও ডিজাইন ইঞ্জিনিয়ার মোঃ সাইফ হোসেন, কৃষি বিশেষজ্ঞ এমডি ওমর ফারুক, মৎস্য বিশেষজ্ঞ শংকর চন্দ্র সূত্রধর, পরিবেশ বিজ্ঞানী ড. কাবিল হোসেন, হবিগঞ্জ এলজিইডির সহকারী প্রকৌশলী (জাইকা–২) মোঃ সরওয়ার আলমসহ বিভিন্ন কর্মকর্তারা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জলবায়ু পরিবর্তন পাঁচ মৌজা সমবায় সমিতির আহ্বায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
এলাকাবাসীর দাবি, প্রকল্পটির বাস্তবায়ন হলে পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় এ উদ্যোগ দৃষ্টান্ত হয়ে উঠবে।