
মাহাবুল ইসলাম, গাজীপুর প্রতিবেদকঃ
গাজীপুরের টঙ্গীতে দিনের শুরুতেই ঘটে গেছে মর্মান্তিক খুনের ঘটনা। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে ছিনতাইকারীদের হামলায় প্রাণ হারালেন সরকারি চাকরিজীবী সিদ্দিকুর রহমান (৫০)। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বাটাগেট এলাকার বিআরটি ফ্লাইওভারের সিঁড়িতে তাঁর ওপর ছুরিকাঘাত চালানো হয়। ঘটনাস্থল এলাকায় ঘটনার সময় স্থানীয় মানুষের যাতায়াত থাকলেও ছিনতাইকারীরা কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যায় বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নিহত সিদ্দিকুর রহমানের বাড়ি বরিশালের বাবুগঞ্জ থানার গাজীপুর গ্রামে। তিনি মৃত ইসমাইল ফকিরের ছেলে। চাকরির সুবাদে তিনি টঙ্গীর মধুমিতা রোডে ভাড়া বাসায় থাকছিলেন। প্রতিদিনের মতো সেদিনও সকালে তিনি কর্মস্থলের উদ্দেশে বাসা থেকে বের হন। কিন্তু ফ্লাইওভারের সিঁড়িতে ওঠার মুহূর্তেই ছিনতাইকারীরা তাঁর পথরোধ করে। ব্যক্তিগত ব্যাগ ও মূল্যবান সামগ্রী হাতিয়ে নিতে বাধা দিলে ধারালো ছুরি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে হামলা চালানো হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় তিনি সিঁড়িতে লুটিয়ে পড়েন।
খবর পেয়ে টঙ্গী পূর্ব থানার টহল দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু হাসপাতালে পৌঁছানোর কিছুক্ষণের মধ্যেই কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসকরা নিহতের শরীরে একাধিক তীক্ষ্ণ ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পেয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন।
হত্যাকাণ্ডের পর এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, প্রতিদিন সকালের সময় ফ্লাইওভারের সিঁড়ি এলাকায় ছিনতাইকারীদের বিচরণ দীর্ঘদিন ধরে চলছে। তবে নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করার মতো কার্যকর ব্যবস্থা নেই বলেই এমন ঘটনা অব্যাহত।
টঙ্গী পূর্ব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আতিকুর রহমান জানিয়েছেন, নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ঘটনার পরপরই আইনগত ব্যবস্থা শুরু হয়েছে। হামলাকারীদের শনাক্ত করতে ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে। দ্রুতই মামলার অগ্রগতি দৃশ্যমান হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।
হঠাৎ ঘটে যাওয়া এই মৃত্যুতে সহকর্মী, প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনের মাঝে শোক নেমে এসেছে। পরিবার জানিয়েছে, সিদ্দিকুর রহমান ছিলেন শান্ত স্বভাবের ও সৎ একজন মানুষ। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন কর্মস্থলে যেতেন, কিন্তু এক মুহূর্তেই সব শেষ হয়ে গেল।
টঙ্গী এলাকার সামাজিক সংগঠনগুলো নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার, ফ্লাইওভারের সিঁড়িতে পুলিশের টহল বৃদ্ধি এবং সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের দাবি জানিয়েছে।