
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে বিএনপির রাজনৈতিক অঙ্গনে হঠাৎ করেই একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে। নিরাপত্তা ঝুঁকির আশঙ্কার কথা উল্লেখ করে দলটির মনোনীত প্রার্থী মো. মাসুদুজ্জামান মাসুদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি তার এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।
নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় যুক্ত হওয়ার পর থেকেই তার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয় বলে জানা গেছে। সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকায় সংঘটিত এক গুলির ঘটনার পর সেই উদ্বেগ আরও তীব্র আকার ধারণ করে। পারিবারিক এই আশঙ্কাকে গুরুত্ব দিয়ে শেষ পর্যন্ত তিনি প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পথ বেছে নেন।
সংবাদ সম্মেলনে মাসুদুজ্জামান মাসুদ জানান, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের বিষয়টি দলীয় শীর্ষ নেতৃত্বকে অবহিত করার চেষ্টা করা হলেও তাৎক্ষণিকভাবে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। ফলে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমেই তিনি প্রথমবারের মতো বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেন। পরবর্তীতে দলের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা দেওয়ার আশ্বাসও দেন তিনি।
তবে এই ঘোষণার পরপরই নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির রাজনৈতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। বিশেষ করে যারা নির্বাচনী কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে তার পাশে ছিলেন, তারা সিদ্ধান্তটি সহজভাবে মেনে নিতে পারেননি। সংবাদ সম্মেলনস্থলেই কয়েকজন নেতাকর্মী তাদের হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
দলীয় নেতাদের মতে, নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এমন সিদ্ধান্ত নেতাকর্মীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। কেউ কেউ বলেন, দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক প্রস্তুতি ও মাঠপর্যায়ের কাজের পর হঠাৎ করে প্রার্থিতা প্রত্যাহার কর্মীদের মনোবলে আঘাত দিয়েছে।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, সিদ্ধান্ত ঘোষণার কিছু সময় আগেও তিনি স্থানীয় একটি পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফিরে এসে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেওয়ায় বিষয়টি আরও বিস্ময়ের জন্ম দেয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনটি বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল এলাকা হিসেবে পরিচিত। সেখানে নিরাপত্তা ইস্যু সামনে এনে একজন প্রার্থীর নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো আগামী দিনের রাজনৈতিক সমীকরণে প্রভাব ফেলতে পারে।
এই ঘটনার পর বিএনপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃত্ব কী সিদ্ধান্ত নেয় এবং আসনটিতে বিকল্প কোনো কৌশল গ্রহণ করা হয় কিনা, তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে জোর আলোচনা চলছে।