
মুজাহিদ হোসেন, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে ৫৫তম বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও বিজয় র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। দিনব্যাপী এই কর্মসূচির মাধ্যমে বক্তারা দেশের স্বাধীনতার প্রকৃত সুফল সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার দাবি জানান।
মঙ্গলবার সকালে বদলগাছী বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে বিজয় র্যালিটি শুরু হয়। র্যালিটি উপজেলা শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে চৌরাস্তা মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। র্যালি শেষে সেখানে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে স্থানীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য প্রদান করেন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বদলগাছী উপজেলা শাখার আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন নওগাঁ জেলা জামায়াতে ইসলামীর বায়তুলমাল সেক্রেটারি অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য, ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার সহকারী সেক্রেটারি এবং নওগাঁ-৩ (মহাদেবপুর-বদলগাছী) আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা মোঃ মাহফুজুর রহমান।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, স্বাধীনতার দীর্ঘ সময় পার হলেও দেশের মানুষ এখনো কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে পারছে না। রাষ্ট্র পরিচালনায় দীর্ঘদিন ধরে চলমান বৈষম্য, দুর্নীতি ও চাঁদাবাজি সাধারণ মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। তারা মনে করেন, দেশের জনগণ বারবার শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন দেখলেও কাঙ্ক্ষিত ন্যায়ভিত্তিক সমাজ এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
বক্তারা আরও বলেন, এই ভূখণ্ড ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত হয়েছে, পাকিস্তানি শাসনের অবিচার থেকে মুক্ত হয়েছে এবং পরবর্তী সময়েও একাধিক স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে জনগণ সংগ্রাম করেছে। সর্বশেষ গণআন্দোলনের মাধ্যমে জনগণ নতুন করে মুক্তির স্বপ্ন দেখছে। তবে এখনো কিছু গোষ্ঠী নতুন ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েমের অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলেও তারা মন্তব্য করেন।
তারা বলেন, বর্তমান প্রজন্ম সচেতন ও সাহসী। নতুন প্রজন্ম আর কোনো স্বৈরতন্ত্র বা ফ্যাসিবাদী শাসন মেনে নেবে না। দেশকে দুর্নীতি, দুঃশাসন ও চাঁদাবাজিমুক্ত করে একটি ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনের জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান বক্তারা।
অনুষ্ঠানে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয় এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য লাভের জন্য দোয়া করা হয়। পাশাপাশি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গণরায়ের মাধ্যমে পরিবর্তনের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
এই কর্মসূচিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও এর অঙ্গসংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন। পুরো অনুষ্ঠানজুড়ে বিজয় দিবসের চেতনা ও রাজনৈতিক সচেতনতার বার্তা তুলে ধরা হয়।