
বিনোদন প্রতিবেদক :
জনপ্রিয় টেলিভিশন অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী এবার বড়পর্দায় তার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা ‘সাবা’ নিয়ে হাজির হচ্ছেন। দীর্ঘ অভিনয়জীবনে টেলিভিশন নাটকে সাফল্য পাওয়ার পর এই ছবির মাধ্যমে তার সিনেমার যাত্রা শুরু হচ্ছে। বহু আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শনের পর সিনেমাটি এবার বাংলাদেশের দর্শকের জন্য মুক্তি পাচ্ছে। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ থেকে দেশের বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে ছবিটি প্রদর্শিত হবে বলে নিশ্চিত করেছেন নির্মাতা মাকসুদ হোসেন।
৯০ মিনিট দৈর্ঘ্যের আবেগঘন এই সিনেমার কাহিনিতে রয়েছে এক মা-মেয়ের টানাপোড়েন, সংগ্রাম এবং ভালোবাসার গল্প। শহরের এক মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে সাবা। বাবা নেই। মা শিরিন সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে দীর্ঘদিন ধরে হুইলচেয়ারে বসবাস করছেন। সংসারের দায়িত্ব আর মায়ের সেবায় নিজের ক্যারিয়ার গুছিয়ে উঠতে পারছে না সাবা। অর্থকষ্টে দিন কাটলেও মায়ের চিকিৎসা ও সুস্থতার জন্য সে দিনরাত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। একদিন হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক হয় মায়ের। চিকিৎসকেরা জানান, জরুরি অপারেশন করতে হবে। মায়ের জীবন বাঁচাতে দিশেহারা সাবা কী করবে—এই প্রশ্নের মধ্য দিয়ে এগোয় সিনেমার কাহিনি।
পরিচালক মাকসুদ হোসেন বলেন, “আমি চাই দর্শক যেন নিজের মা’কে নিয়ে এই ছবি দেখতে আসেন। সাবা মূলত ছেড়ে দেওয়ার সাহস ও মা-মেয়ের ভালোবাসার গল্প। দর্শক যদি মায়ের হাত ধরে প্রেক্ষাগৃহে আসেন, তাহলে এই সিনেমার বার্তা আরও গভীরভাবে ছুঁয়ে যাবে।”
মেহজাবীনও ফেসবুকে দর্শকদের আহ্বান জানিয়ে লিখেছেন, “এটি একটি বিশেষ সিনেমা, আপনার মাকে সঙ্গে নিয়ে আসুন, এ গল্প তার জন্যও।” পোস্টের সঙ্গে তিনি ভালোবাসার ইমোজি জুড়ে দেন।
টরোন্টো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সাবা-র বিশ্বপ্রিমিয়ার হওয়ার পর এটি বুসান, রেড সি, গ্যোটেবর্গ, সিডনি ও রেইনড্যান্সসহ নানা মর্যাদাপূর্ণ উৎসবে প্রদর্শিত হয় এবং প্রশংসা কুড়ায়। আন্তর্জাতিক মহলে প্রশংসা পাওয়ার পর সিনেমাটির প্রতি দেশের দর্শকদের আগ্রহও বেড়েছে।
মেহজাবীনের পাশাপাশি সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন অভিজ্ঞ শিল্পী রোকেয়া প্রাচী, মোস্তফা মনোয়ারসহ আরও অনেকে। তাদের মতে, সাবা বাংলাদেশের দর্শকের জন্য এক আবেগঘন ও নতুন অভিজ্ঞতা নিয়ে আসবে, যেখানে পরিবার, ত্যাগ আর ভালোবাসার মর্মস্পর্শী দিকগুলো ফুটে উঠবে।
চলচ্চিত্রপ্রেমীরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক বাস্তবতার গল্প নিয়ে এমন নির্মাণ খুব একটা দেখা যায় না। তাই সাবার মতো গল্পভিত্তিক সিনেমা দর্শকদের নতুন স্বাদ দেবে এবং ঢালিউডে মেহজাবীনের উপস্থিতি বড়পর্দায় আলাদা মাত্রা যোগ করবে।
সবশেষে বলা যায়, আন্তর্জাতিক সাফল্যের পর বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে সাবা মুক্তি পাওয়া কেবল একটি সিনেমার মুক্তি নয়, বরং টেলিভিশনের জনপ্রিয় মুখ মেহজাবীনের চলচ্চিত্র জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সূচনা। এই সিনেমা বাংলাদেশের দর্শকদের জন্য যেমন নতুন অভিজ্ঞতা বয়ে আনবে, তেমনি মা-মেয়ের সম্পর্ককে কেন্দ্র করে গড়া গল্পের মাধ্যমে এক অনন্য আবেগময় বার্তাও পৌঁছে দেবে।
র