
নিজস্ব প্রতিবেদক | নারায়ণগঞ্জ:
নারায়ণগঞ্জের জালকুড়ি জামিয়া রাব্বানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসার এক প্রাক্তন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় নারীদের ইনবক্সে উত্যক্ত ও কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্তের নাম সাজ্জাদ হোসাইন (২৪) বলে জানা গেছে।
🔍 অভিযোগের বিস্তারিত
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাজ্জাদ হোসাইন বর্তমানে শরীয়তপুর জেলায় বসবাস করছেন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি ফেসবুকসহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে নারীদের ইনবক্সে কুপ্রস্তাব পাঠান এবং ব্যক্তিগত সাক্ষাতের প্রস্তাব দেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিনি সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জের আশা চৌধুরী নামের এক বিবাহিতা নারীকে অনৈতিক সম্পর্কে জড়ানোর প্রস্তাব দেন। পরে সুযোগ না পেয়ে নূর জাহান নামের অপর এক নারীকে একই ধরনের প্রস্তাব দেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগকারীরা দাবি করেছেন, সাজ্জাদ হোসাইন নারায়ণগঞ্জে এসে কয়েকবার সরাসরি সাক্ষাতের চেষ্টাও করেছেন। তার বিরুদ্ধে নারীরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন বলে জানা গেছে।

⚖️ আইন বিশেষজ্ঞের মতামত
অ্যাডভোকেট মাহবুবুল আলম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও সাইবার আইন বিশেষজ্ঞ, বলেন—
“সোশ্যাল মিডিয়ায় কাউকে ইনবক্সে উত্যক্ত করা বা কুপ্রস্তাব দেওয়া বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৫০৯ ধারা এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮-এর ২৪(১) ধারা অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ। এ ধরনের ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তি সর্বোচ্চ ৩ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা পেতে পারেন।”
তিনি আরও বলেন—
“যদি কুপ্রস্তাবের মাধ্যমে নারীকে ভয়ভীতি, হুমকি বা যৌন হয়রানির পরিস্থিতিতে ফেলা হয়, তবে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩)-এর ১০(২) ধারা অনুসারে সর্বোচ্চ ৭ বছর কারাদণ্ড হতে পারে। এসব অপরাধের ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীরা সরাসরি থানায় বা সাইবার ক্রাইম ইউনিটে অভিযোগ জানাতে পারেন।”
🛡️ আইনি ব্যবস্থা ও করণীয়
বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন, ভুক্তভোগীরা যেন দ্রুত সংশ্লিষ্ট থানায় জিডি বা মামলা করেন এবং প্রমাণ হিসেবে ইনবক্স মেসেজ, স্ক্রিনশট ও প্রোফাইল লিংক সংরক্ষণ করেন।
এ ছাড়া বাংলাদেশ পুলিশের “Cyber Support for Women” পেজের মাধ্যমেও তাৎক্ষণিক সহায়তা নেওয়া যায়।