
মো: সাকিবুল ইসলাম স্বাধীন, রাজশাহী:
রাজশাহী সিটি কলেজে সম্প্রতি বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ ও রাজনৈতিক তৎপরতা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এসব ঘটনার ধারাবাহিকতায় ১৯ নভেম্বর সকাল ১১টায় কলেজ প্রাঙ্গণে সাধারণ শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। তাদের দাবি—শিক্ষাঙ্গনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, বহিরাগতদের অনিয়ন্ত্রিত প্রবেশ বন্ধ করা এবং কলেজের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ অক্ষুণ্ণ রাখা।
শিক্ষার্থীদের বর্ণনা অনুযায়ী, ১৮ নভেম্বর কলেজে কয়েকজন বহিরাগত প্রবেশ করলে পরিস্থিতি উত্তেজনাকর হয়ে ওঠে। তারা জানান, বহিরাগতরা স্থানীয় রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে ধারণা করা হয়। শিক্ষার্থীরা প্রবেশে বাধা দিলে কথাকাটাকাটির পর পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। এই ঘটনার পরদিনই নিরাপত্তাহীনতা ও চাপের মধ্যে অনেকে ক্লাস করতে না পারায় শিক্ষার্থীরা সম্মিলিতভাবে মানববন্ধনের সিদ্ধান্ত নেন।
রাজশাহী দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষানগরী হিসেবে পরিচিত, আর রাজশাহী সিটি কলেজও একটি স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে অভিভাবকদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য। বহু শিক্ষার্থী হোস্টেলে থেকে নিয়মিত পড়াশোনা করে, আর তাদের পরিবার কলেজের নিরাপদ পরিবেশের ওপর আস্থা রাখেন। শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, বহিরাগতদের হঠাৎ আগ্রাসন, রাজনৈতিক উত্তেজনা ও বিশৃঙ্খলার ঘটনা এই পরিবেশকে ঝুঁকির মুখে ফেলছে। এর ফলে অভিভাবকেরা তাদের সন্তানদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হতে পারেন, যা প্রতিষ্ঠানটির দীর্ঘদিনের সুনামকেও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা জানান, তারা পূর্বেও একাধিকবার কলেজ প্রশাসনকে নিরাপত্তা নিয়ে সতর্ক করেছেন। কিন্তু কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি বলেই তাদের দাবি। বাধ্য হয়ে তারা গণভাবে দাঁড়িয়ে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং প্রশাসনের কাছে তাৎক্ষণিক, দৃশ্যমান ও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তাদের মতে, শিক্ষাঙ্গন শুধু পাঠদানের জায়গা; এখানে কোনো রাজনৈতিক কার্যক্রম বা বহিরাগত প্রভাব গ্রহণযোগ্য নয়। শিক্ষার্থীরা চান, কলেজের প্রতিটি ক্লাস, প্রতিটি করিডোর এবং পুরো প্রাঙ্গণ যেন নিশ্চিন্ত ও নিরাপদ থাকে।
মানববন্ধনে তারা আরও জানান, দৈনন্দিন ক্লাস ও শিক্ষার স্বাভাবিক গতি যাতে কোনোভাবেই ব্যাহত না হয়, সেজন্য প্রয়োজন নিরাপত্তা জোরদার করা, বহিরাগত প্রবেশের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আর ক্যাম্পাস পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা শক্তিশালী করা। তারা প্রশাসনের কাছে এমন ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান যাতে ভবিষ্যতে আর কোনো সংঘাত, ধাওয়া–পাল্টাধাওয়া বা মারামারির ঘটনা ঘটতে না পারে এবং কলেজের শিক্ষা পরিবেশ স্বাভাবিকভাবে বজায় থাকে।