
মাজহারুল ইসলাম বাদল:
ঐতিহ্যবাহী নবীনগর প্রেসক্লাবকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি ভিত্তিহীন গুজব ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় সাংবাদিক সমাজ বলছে, একটি স্বার্থান্বেষী মহল প্রেসক্লাবকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে, যা সাংবাদিকতার স্বাধীনতা ও জনস্বার্থের জন্য হুমকিস্বরূপ।
প্রেসক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ হোসেন শান্তি বলেন, নবীনগর প্রেসক্লাব কোনো ব্যক্তির জমি দখল করেনি। যে স্থানে সাইনবোর্ড ঝুলছে সেটি সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত জায়গা। বহু বছর ধরে প্রেসক্লাবের একটি ঘর সেখানে বিদ্যমান, যার ভাড়া থেকে সংগঠনের ব্যয়ভার বহন করা হয়। সম্প্রতি ভবন সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিলে প্রতিহিংসাপরায়ণ কিছু ব্যক্তি গুজব ছড়িয়ে প্রেসক্লাবকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করছে।
তিনি আরও জানান, ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর জেলা প্রশাসকের কাছে প্রেসক্লাব আনুষ্ঠানিকভাবে জায়গাটি বরাদ্দের আবেদন করে। প্রশাসনের সহযোগিতায় একটি ঘর নির্মিত হয়। আবেদনকৃত জায়গার একটি অংশ এখনো খালি থাকায় সেখানে ভবন সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মহিলা কলেজের পেছনের এ জায়গাটি একসময় সরকারি খাল ছিল। বহু আগে খালটি ভরাট হয়ে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়। এর একটি অংশ কলেজকে বরাদ্দ দেওয়া হলেও বাকি অংশ দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল। স্থানীয়দের মতে, খাস জমি অব্যবহৃত থাকলে দখল হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে, কিন্তু প্রেসক্লাবের নামে বরাদ্দ হলে তা সাংবাদিক সমাজকে শক্তিশালী করবে এবং জনস্বার্থে কাজে লাগবে।
এদিকে সাংবাদিক সমাজের অভিযোগ, প্রেসক্লাব থেকে একাধিকবার বহিষ্কৃত ও বিতর্কিত একজন ব্যক্তি এখন মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা করছেন। তাদের দাবি, “তিন দফা বহিষ্কৃত ওই ব্যক্তি ব্যক্তিগত ক্ষোভ মেটাতে মিথ্যা সংবাদ প্রচার করে সাংবাদিক সমাজকে কলঙ্কিত ও জনমনে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।”
প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি জালাল উদ্দিন মনির বলেন, “প্রেসক্লাবের জায়গা নিয়ে প্রয়াত সাবেক কেবিনেট সচিব মরহুম আকবর আলী খানের নাম জড়িয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে। বাস্তবে তাঁর উত্তরাধিকারীরা বহু আগেই সম্পত্তি বিক্রি করেছেন। বর্তমানে প্রেসক্লাব যে জায়গায় অবস্থান করছে সেটি তাঁর সম্পত্তির অন্তর্ভুক্ত নয়।”
স্থানীয়রা মনে করছেন, ৩৬ বছরের প্রাচীন নবীনগর প্রেসক্লাব এতদিন অবকাঠামোগতভাবে অবহেলিত ছিল। এখন সরকারি খাস জমিতে নিজস্ব ভবন নির্মিত হলে সাংবাদিক সমাজ আরও শক্তিশালী হবে এবং জনস্বার্থ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।