রাজশাহীতে মাদ্রাসা দখল ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ, দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে অনিয়মের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীর পবা উপজেলার দিঘীপাড়া, পশ্চিমপাড়া, কলেজপাড়া ও দারুশা বাজিতপুর এলাকার সাধারণ মানুষ দারুশা কেন্দ্রীয় দাখিল মাদ্রাসার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ ও জবরদখলের অভিযোগ তুলেছেন।

অভিযোগের বিবরণ

এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রায় ১৩ বছর ধরে সহকারী শিক্ষক শওকত আলী মুক্তার দলীয় প্রভাব ও প্রভাবশালী পেশীশক্তি ব্যবহার করে মাদ্রাসাটি জবরদখল করে রেখেছেন। তারা দাবি করেছেন, মাদ্রাসার যাবতীয় অর্থ, সম্পদ ও সম্পত্তি ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

বর্তমানে মাদ্রাসায় কোনো ছাত্র নেই। অভিযোগে বলা হয়েছে, শওকত আলীর বড় ভাই আওয়ামী লীগের ইউপি চেয়ারম্যান ছিলেন, যার রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে মাদ্রাসার সম্পদ আত্মসাত করা হয়েছে।

মাদ্রাসার ভবন ও মাঠের পাশাপাশি প্রায় ২ বিঘা ১৬ কাঠা পুকুর এবং ৩ বিঘা ১৬ কাঠা আবাদি জমি রয়েছে। এছাড়াও, মাদ্রাসার নিজস্ব আমবাগান থেকে প্রতিবছর নিলামের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ আয় হয়। তবে এসব আয়ের কোনো সঠিক হিসাব প্রকাশ করা হয়নি।

এলাকাবাসী একাধিকবার হিসাব জানতে চেয়েও শওকত আলী মুক্তার তা দিতে অস্বীকৃতি জানান। ২৩ আগস্ট ২০২৪ তারিখে এক আলোচনা সভায় অস্থায়ী পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি মাদ্রাসার হিসাব জানতে লিখিতভাবে আবেদন করলেও আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়নি।

আর্থিক অনিয়মের প্রমাণ

২০১২ ও ২০১৩ সালের হিসাব অনুযায়ী মাদ্রাসার প্রকৃত আয় ছিল ৩,৪৬,৭০১ টাকা, ব্যয় ১,৩১,১২২ টাকা। তাতেও স্থিতি থাকা উচিত ছিল ২,১৫,৫৭৯ টাকা, কিন্তু শওকত আলী মুক্তার খসড়া বিবরণীতে একই দুই বছরে ব্যয় দেখানো হয়েছে ৪,২৫,৬২২ টাকা, যা প্রকৃত হিসাবের তুলনায় ৭৮,৯২১ টাকা বেশি। এলাকাবাসী দাবি করেছেন, এটি অর্থ আত্মসাতের সুস্পষ্ট প্রমাণ।

অভিযোগপত্র ও তদন্ত

মুহাম্মদ হাসিবুর রহমান, মো. জামিউল ইসলাম ও মো. জামাল উদ্দিন স্বাক্ষরিত অভিযোগপত্র ৩০ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে পবা উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে দাখিল করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, শওকত আলী মুক্তারের বিরুদ্ধে কর্ণহার থানায় একটি মামলা রয়েছে, যেখানে তিনি ২৪ নম্বর আসামি হিসেবে চার্জশিটভুক্ত।

মাদ্রাসার ও শিক্ষকের মন্তব্য

মাদ্রাসার সুপার আব্দুল মান্নান অভিযোগকে ভিত্তিহীন দাবি করে বলেছেন, “সহকারী শিক্ষক শওকত আলীর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, তা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ক্লাস না হওয়ার অভিযোগও মিথ্যা। আয়-ব্যয়ের হিসাব নিয়মিত তদারকি করা হয়েছে।”

শওকত আলী মুক্তার বলেছেন, “আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার।”

পবা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোতাহার হোসেন জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত প্রতিবেদন ইউএনওর কাছে জমা হয়েছে। যেহেতু এটি একটি নন-এনজিও প্রতিষ্ঠান, অফিস থেকে এ বিষয়ে আর কোনো করণীয় নেই।

রাজশাহীতে মাদ্রাসা দখল ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ, দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে অনিয়মের অভিযোগ

অক্টোবর ১৯, ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীর পবা উপজেলার দিঘীপাড়া, পশ্চিমপাড়া, কলেজপাড়া ও দারুশা বাজিতপুর এলাকার সাধারণ মানুষ দারুশা কেন্দ্রীয় দাখিল মাদ্রাসার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ ও জবরদখলের অভিযোগ তুলেছেন।

অভিযোগের বিবরণ

এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রায় ১৩ বছর ধরে সহকারী শিক্ষক শওকত আলী মুক্তার দলীয় প্রভাব ও প্রভাবশালী পেশীশক্তি ব্যবহার করে মাদ্রাসাটি জবরদখল করে রেখেছেন। তারা দাবি করেছেন, মাদ্রাসার যাবতীয় অর্থ, সম্পদ ও সম্পত্তি ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

বর্তমানে মাদ্রাসায় কোনো ছাত্র নেই। অভিযোগে বলা হয়েছে, শওকত আলীর বড় ভাই আওয়ামী লীগের ইউপি চেয়ারম্যান ছিলেন, যার রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে মাদ্রাসার সম্পদ আত্মসাত করা হয়েছে।

মাদ্রাসার ভবন ও মাঠের পাশাপাশি প্রায় ২ বিঘা ১৬ কাঠা পুকুর এবং ৩ বিঘা ১৬ কাঠা আবাদি জমি রয়েছে। এছাড়াও, মাদ্রাসার নিজস্ব আমবাগান থেকে প্রতিবছর নিলামের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ আয় হয়। তবে এসব আয়ের কোনো সঠিক হিসাব প্রকাশ করা হয়নি।

এলাকাবাসী একাধিকবার হিসাব জানতে চেয়েও শওকত আলী মুক্তার তা দিতে অস্বীকৃতি জানান। ২৩ আগস্ট ২০২৪ তারিখে এক আলোচনা সভায় অস্থায়ী পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি মাদ্রাসার হিসাব জানতে লিখিতভাবে আবেদন করলেও আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়নি।

আর্থিক অনিয়মের প্রমাণ

২০১২ ও ২০১৩ সালের হিসাব অনুযায়ী মাদ্রাসার প্রকৃত আয় ছিল ৩,৪৬,৭০১ টাকা, ব্যয় ১,৩১,১২২ টাকা। তাতেও স্থিতি থাকা উচিত ছিল ২,১৫,৫৭৯ টাকা, কিন্তু শওকত আলী মুক্তার খসড়া বিবরণীতে একই দুই বছরে ব্যয় দেখানো হয়েছে ৪,২৫,৬২২ টাকা, যা প্রকৃত হিসাবের তুলনায় ৭৮,৯২১ টাকা বেশি। এলাকাবাসী দাবি করেছেন, এটি অর্থ আত্মসাতের সুস্পষ্ট প্রমাণ।

অভিযোগপত্র ও তদন্ত

মুহাম্মদ হাসিবুর রহমান, মো. জামিউল ইসলাম ও মো. জামাল উদ্দিন স্বাক্ষরিত অভিযোগপত্র ৩০ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে পবা উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে দাখিল করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, শওকত আলী মুক্তারের বিরুদ্ধে কর্ণহার থানায় একটি মামলা রয়েছে, যেখানে তিনি ২৪ নম্বর আসামি হিসেবে চার্জশিটভুক্ত।

মাদ্রাসার ও শিক্ষকের মন্তব্য

মাদ্রাসার সুপার আব্দুল মান্নান অভিযোগকে ভিত্তিহীন দাবি করে বলেছেন, “সহকারী শিক্ষক শওকত আলীর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, তা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ক্লাস না হওয়ার অভিযোগও মিথ্যা। আয়-ব্যয়ের হিসাব নিয়মিত তদারকি করা হয়েছে।”

শওকত আলী মুক্তার বলেছেন, “আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার।”

পবা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোতাহার হোসেন জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত প্রতিবেদন ইউএনওর কাছে জমা হয়েছে। যেহেতু এটি একটি নন-এনজিও প্রতিষ্ঠান, অফিস থেকে এ বিষয়ে আর কোনো করণীয় নেই।