বিশ্বনাথে আশুগঞ্জ বাজারে সেতুর অভাবে দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ, বাঁশের সাঁকোই ভরসা এলাকাবাসীর

সেলিম মাহবুবঃ

সিলেট জেলার বিশ্বনাথ উপজেলার আশুগঞ্জ বাজারে অবস্থিত খাজাঞ্চী নদীর ওপর দীর্ঘদিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পাকা সেতুর দাবি আজও পূরণ হয়নি। স্বাধীনতার পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে এই অঞ্চলের মানুষের যাতায়াত নির্ভর করে আছে এলাকাবাসীর উদ্যোগে নির্মিত একটি বাঁশের সাঁকোর ওপর। ঝুঁকিপূর্ণ এই সাঁকোই নদীর দুই পাড়ের মানুষের জীবনযাত্রাকে সীমাবদ্ধ করে রেখেছে। স্রোত বেড়ে গেলে সাঁকো ভেঙে পড়ে এবং তখন শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাজার যোগাযোগ পুরোপুরি বিঘ্নিত হয়ে পড়ে। এতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয় স্কুল–কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী ও কৃষক পরিবারের মানুষদের।

খাজাঞ্চী ও রামপাশা ইউনিয়নের মিলিত প্রায় ২৫টি গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার বাসিন্দা প্রতিদিন এই সাঁকো ব্যবহার করেন। ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষিপণ্য পরিবহন, রোগী নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া কিংবা শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাওয়া—সব ক্ষেত্রেই নির্ভর করতে হয় এই অস্থায়ী কাঠামোর ওপর। বহু বছর ধরে এলাকাবাসীর চাঁদা, বাঁশ-কাঠ, স্বেচ্ছাশ্রম ও সামান্য সংগ্রহকৃত অর্থে সাঁকোটি নির্মাণ ও সংস্কার করা হয়। নদীর ওপর সেতু নির্মাণের দাবি জানালেও সরকারি পর্যায়ে স্থায়ী কোনো উদ্যোগ না থাকায় হতাশা বাড়ছে স্থানীয়দের মধ্যে।

এ এলাকার দক্ষিণ পারে রয়েছে আশুগঞ্জ বাজার, আশুগঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজ, আশুগঞ্জ প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। নদীর উত্তর পাড়ের শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো পার হয়ে এসব প্রতিষ্ঠানে যেতে বাধ্য হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে সাঁকো ভেঙে গেলে পড়ালেখা, চিকিৎসা ও দৈনন্দিন চলাচল প্রায় অচল হয়ে পড়ে। এসব কারণে একটি পাকা সেতুর প্রয়োজনীয়তা বহুদিন ধরেই আলোচিত হলেও তা আজও বাস্তবে রূপ পায়নি।

আরোও পড়ুন – জুড়ীতে রাস্তা সংস্কারের দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন

উপজেলা পর্যায়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নে প্রতি বছর সরকার বিপুল অর্থ বরাদ্দ দিলেও এই অঞ্চলে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন পৌঁছায় না বলে স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের ভাষ্য, নির্বাচনের সময় বারবার প্রতিশ্রুতি দিলেও পরবর্তীতে সেতু নির্মাণের বিষয়টি থেমে থাকে ফাইলের পাতায়। ফলে বাধ্য হয়ে এলাকাবাসী প্রতিবছর নতুন করে বাঁশের সাঁকো তৈরি করতে হয়, যার জন্য উল্লেখযোগ্য অর্থ ব্যয় হয়।

উপজেলা প্রকৌশল দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, খাজাঞ্চী নদীর ওপর পাকা সেতু নির্মাণের জন্য স্থানীয়দের আবেদন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় পর্যন্ত পৌঁছেছে এবং প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও বরাদ্দ নিশ্চিত হলে এ অঞ্চলের বহু বছরের চাওয়া এটি বাস্তবায়িত হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তারা।

বহুদিনের অবহেলায় পিছিয়ে থাকা এই জনপদে একটি স্থায়ী সেতু নির্মাণ হলে উন্নত হবে যোগাযোগ ব্যবস্থা, বাড়বে শিক্ষা ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি। স্থানীয়দের প্রত্যাশা, তাদের দীর্ঘদিনের এ দাবি দ্রুত বাস্তবে রূপ নেবে।

বিশ্বনাথে আশুগঞ্জ বাজারে সেতুর অভাবে দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ, বাঁশের সাঁকোই ভরসা এলাকাবাসীর

নভেম্বর ২০, ২০২৫

সেলিম মাহবুবঃ

সিলেট জেলার বিশ্বনাথ উপজেলার আশুগঞ্জ বাজারে অবস্থিত খাজাঞ্চী নদীর ওপর দীর্ঘদিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পাকা সেতুর দাবি আজও পূরণ হয়নি। স্বাধীনতার পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে এই অঞ্চলের মানুষের যাতায়াত নির্ভর করে আছে এলাকাবাসীর উদ্যোগে নির্মিত একটি বাঁশের সাঁকোর ওপর। ঝুঁকিপূর্ণ এই সাঁকোই নদীর দুই পাড়ের মানুষের জীবনযাত্রাকে সীমাবদ্ধ করে রেখেছে। স্রোত বেড়ে গেলে সাঁকো ভেঙে পড়ে এবং তখন শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাজার যোগাযোগ পুরোপুরি বিঘ্নিত হয়ে পড়ে। এতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয় স্কুল–কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী ও কৃষক পরিবারের মানুষদের।

খাজাঞ্চী ও রামপাশা ইউনিয়নের মিলিত প্রায় ২৫টি গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার বাসিন্দা প্রতিদিন এই সাঁকো ব্যবহার করেন। ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষিপণ্য পরিবহন, রোগী নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া কিংবা শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাওয়া—সব ক্ষেত্রেই নির্ভর করতে হয় এই অস্থায়ী কাঠামোর ওপর। বহু বছর ধরে এলাকাবাসীর চাঁদা, বাঁশ-কাঠ, স্বেচ্ছাশ্রম ও সামান্য সংগ্রহকৃত অর্থে সাঁকোটি নির্মাণ ও সংস্কার করা হয়। নদীর ওপর সেতু নির্মাণের দাবি জানালেও সরকারি পর্যায়ে স্থায়ী কোনো উদ্যোগ না থাকায় হতাশা বাড়ছে স্থানীয়দের মধ্যে।

এ এলাকার দক্ষিণ পারে রয়েছে আশুগঞ্জ বাজার, আশুগঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজ, আশুগঞ্জ প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। নদীর উত্তর পাড়ের শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো পার হয়ে এসব প্রতিষ্ঠানে যেতে বাধ্য হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে সাঁকো ভেঙে গেলে পড়ালেখা, চিকিৎসা ও দৈনন্দিন চলাচল প্রায় অচল হয়ে পড়ে। এসব কারণে একটি পাকা সেতুর প্রয়োজনীয়তা বহুদিন ধরেই আলোচিত হলেও তা আজও বাস্তবে রূপ পায়নি।

আরোও পড়ুন – জুড়ীতে রাস্তা সংস্কারের দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন

উপজেলা পর্যায়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নে প্রতি বছর সরকার বিপুল অর্থ বরাদ্দ দিলেও এই অঞ্চলে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন পৌঁছায় না বলে স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের ভাষ্য, নির্বাচনের সময় বারবার প্রতিশ্রুতি দিলেও পরবর্তীতে সেতু নির্মাণের বিষয়টি থেমে থাকে ফাইলের পাতায়। ফলে বাধ্য হয়ে এলাকাবাসী প্রতিবছর নতুন করে বাঁশের সাঁকো তৈরি করতে হয়, যার জন্য উল্লেখযোগ্য অর্থ ব্যয় হয়।

উপজেলা প্রকৌশল দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, খাজাঞ্চী নদীর ওপর পাকা সেতু নির্মাণের জন্য স্থানীয়দের আবেদন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় পর্যন্ত পৌঁছেছে এবং প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও বরাদ্দ নিশ্চিত হলে এ অঞ্চলের বহু বছরের চাওয়া এটি বাস্তবায়িত হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তারা।

বহুদিনের অবহেলায় পিছিয়ে থাকা এই জনপদে একটি স্থায়ী সেতু নির্মাণ হলে উন্নত হবে যোগাযোগ ব্যবস্থা, বাড়বে শিক্ষা ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি। স্থানীয়দের প্রত্যাশা, তাদের দীর্ঘদিনের এ দাবি দ্রুত বাস্তবে রূপ নেবে।