মো: সাকিবুল ইসলাম স্বাধীন, রাজশাহীঃ
রাজশাহীতে উন্নয়নের নামে শুরু হয়েছে সবুজ ধ্বংসের মহোৎসব। রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (রামেবি) স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য বাজেসিলিন্দা মৌজার ২০৫ বিঘা জমির ১ হাজার ৮৫৩টি গাছ নিলামে বিক্রি করা হয়েছে মাত্র ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকায়। অথচ কাঠ ব্যবসায়ীদের হিসাবে এসব গাছের বাজারমূল্য ৪২ লাখ টাকারও বেশি।
অভিযোগ উঠেছে—নিলাম প্রক্রিয়ায় সিন্ডিকেট গড়ে বাইরের দরদাতাদের অংশ নিতে বাধা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগও জমা পড়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, সোমবার দুপুরে দরপত্র খোলা হলে মাত্র পাঁচটি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। এর মধ্যে ‘রোমিন এন্টারপ্রাইজ’ সর্বোচ্চ দর দেয় ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা। অন্য চার প্রতিষ্ঠানের দর ছিল ১৮ লাখ ৪৮ হাজার, ১৮ লাখ, ৮ লাখ ও ৬ লাখ টাকা।
ঠিকাদার চান সওদাগর অভিযোগ করেন, “সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আমাদের ম্যানেজার দরপত্র জমা দিতে গেলে আল মামুন রাব্বুল নামের একজন ধাক্কাধাক্কি করে বাধা দেন। তারা সিন্ডিকেট করে কম দামে গাছ নিয়েছেন।”
অভিযুক্ত আল মামুন রাব্বুল অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমার প্রতিষ্ঠান বৈধভাবে সর্বোচ্চ দর দিয়েছে। কেউ বাধা পেলে অভিযোগ করুক, আমি ভয় পাই না।”
রামেবির উপাচার্য অধ্যাপক মোহা. জাওয়াদুল হক এ বিষয়ে ফোন ধরেননি। তবে সেকশন অফিসার রেজাউল উদ্দিন জানান, “কয়েকজন ঠিকাদারের অভিযোগ পেয়েছি, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তদন্ত করছে।”
এদিকে শুধু রামেবিই নয়, রাজশাহী ওয়াসা পাইপলাইন প্রকল্পে ৪১৮টি ও সার্কিট হাউস সম্প্রসারণে ৫২টি গাছ কাটার সিদ্ধান্তে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। সব মিলিয়ে রাজশাহীতে তিনটি প্রকল্পে মোট ২,৩২৩টি গাছ বিপন্ন।
ইয়ুথ অ্যাকশন ফর সোস্যাল চেঞ্জ (ইয়্যাস)-এর সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান আতিক বলেন,
“রাজশাহীর এই পুরোনো গাছগুলো আমাদের পরিবেশের রক্ষাকবচ। অথচ উন্নয়নের নামে এগুলো কেটে ফেলা হচ্ছে। প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে রাজশাহী ধীরে ধীরে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়বে।”
রোববার বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে তিন দফা দাবি জানিয়েছে—
১️⃣ সার্কিট হাউস সম্প্রসারণে কোনো গাছ কাটা যাবে না।
২️⃣ ভবিষ্যতের উন্নয়ন প্রকল্পে প্রাণ-প্রকৃতি ও পরিবেশের ক্ষতি যেন না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।
৩️⃣ যে কোনো প্রকল্প নেওয়ার আগে পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ও নাগরিক সংগঠনের মতামত নিতে হবে।
পরিবেশ আন্দোলনকারীরা সতর্ক করেছেন, বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তার কারণে রাজশাহীর সবুজ আবরণ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, যা ভবিষ্যতে জনস্বাস্থ্য ও জলবায়ু ভারসাম্যের জন্য ভয়াবহ হুমকি সৃষ্টি করবে।

উন্নয়নের নামে সবুজ হত্যাযজ্ঞ: রাজশাহীতে একসাথে বিপন্ন ২,৩২৩ গাছ
মো: সাকিবুল ইসলাম স্বাধীন, রাজশাহীঃ
রাজশাহীতে উন্নয়নের নামে শুরু হয়েছে সবুজ ধ্বংসের মহোৎসব। রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (রামেবি) স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য বাজেসিলিন্দা মৌজার ২০৫ বিঘা জমির ১ হাজার ৮৫৩টি গাছ নিলামে বিক্রি করা হয়েছে মাত্র ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকায়। অথচ কাঠ ব্যবসায়ীদের হিসাবে এসব গাছের বাজারমূল্য ৪২ লাখ টাকারও বেশি।
অভিযোগ উঠেছে—নিলাম প্রক্রিয়ায় সিন্ডিকেট গড়ে বাইরের দরদাতাদের অংশ নিতে বাধা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগও জমা পড়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, সোমবার দুপুরে দরপত্র খোলা হলে মাত্র পাঁচটি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। এর মধ্যে ‘রোমিন এন্টারপ্রাইজ’ সর্বোচ্চ দর দেয় ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা। অন্য চার প্রতিষ্ঠানের দর ছিল ১৮ লাখ ৪৮ হাজার, ১৮ লাখ, ৮ লাখ ও ৬ লাখ টাকা।
ঠিকাদার চান সওদাগর অভিযোগ করেন, “সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আমাদের ম্যানেজার দরপত্র জমা দিতে গেলে আল মামুন রাব্বুল নামের একজন ধাক্কাধাক্কি করে বাধা দেন। তারা সিন্ডিকেট করে কম দামে গাছ নিয়েছেন।”
অভিযুক্ত আল মামুন রাব্বুল অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমার প্রতিষ্ঠান বৈধভাবে সর্বোচ্চ দর দিয়েছে। কেউ বাধা পেলে অভিযোগ করুক, আমি ভয় পাই না।”
রামেবির উপাচার্য অধ্যাপক মোহা. জাওয়াদুল হক এ বিষয়ে ফোন ধরেননি। তবে সেকশন অফিসার রেজাউল উদ্দিন জানান, “কয়েকজন ঠিকাদারের অভিযোগ পেয়েছি, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তদন্ত করছে।”
এদিকে শুধু রামেবিই নয়, রাজশাহী ওয়াসা পাইপলাইন প্রকল্পে ৪১৮টি ও সার্কিট হাউস সম্প্রসারণে ৫২টি গাছ কাটার সিদ্ধান্তে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। সব মিলিয়ে রাজশাহীতে তিনটি প্রকল্পে মোট ২,৩২৩টি গাছ বিপন্ন।
ইয়ুথ অ্যাকশন ফর সোস্যাল চেঞ্জ (ইয়্যাস)-এর সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান আতিক বলেন,
“রাজশাহীর এই পুরোনো গাছগুলো আমাদের পরিবেশের রক্ষাকবচ। অথচ উন্নয়নের নামে এগুলো কেটে ফেলা হচ্ছে। প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে রাজশাহী ধীরে ধীরে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়বে।”
রোববার বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে তিন দফা দাবি জানিয়েছে—
১️⃣ সার্কিট হাউস সম্প্রসারণে কোনো গাছ কাটা যাবে না।
২️⃣ ভবিষ্যতের উন্নয়ন প্রকল্পে প্রাণ-প্রকৃতি ও পরিবেশের ক্ষতি যেন না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।
৩️⃣ যে কোনো প্রকল্প নেওয়ার আগে পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ও নাগরিক সংগঠনের মতামত নিতে হবে।
পরিবেশ আন্দোলনকারীরা সতর্ক করেছেন, বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তার কারণে রাজশাহীর সবুজ আবরণ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, যা ভবিষ্যতে জনস্বাস্থ্য ও জলবায়ু ভারসাম্যের জন্য ভয়াবহ হুমকি সৃষ্টি করবে।
