রাজশাহী প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর সীমান্তবর্তী গোদাগাড়ীতে হেরোইন আত্মসাতের ঘটনা ঘিরে বাহক রফিকুল ইসলাম হত্যার পাঁচ বছর পেরিয়ে গেছে। মামলায় পুলিশের পাঁচ সদস্যের নাম আসামি হিসেবে উঠে এলেও এখনো চার্জশিট আদালতে জমা হয়নি। পরিবার বলছে, প্রভাবশালী পুলিশ সদস্যদের বাঁচাতে তদন্ত প্রক্রিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে ধীরগতিতে চলছে।
ঘটনাটি ২০২০ সালের ২১ মার্চ রাতে। স্থানীয় ব্যক্তি ইসাহাক আলীকে নিয়ে পুলিশের একটি বিশেষ দল সীমান্ত এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযানে যায়। সেখানে হেরোইন নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন বাহক রফিকুল ও মাদক ব্যবসায়ী জামাল। ধস্তাধস্তির সময় রফিকুলকে নির্মমভাবে মারধর করা হয়। পরে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ।
পরদিন পদ্মার চরে রফিকুলের মরদেহ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। প্রথমে এটিকে বজ্রপাতজনিত মৃত্যু হিসেবে অপমৃত্যু মামলা নথিভুক্ত করা হয়। তবে ময়নাতদন্তে দেখা যায়, রফিকুলের শরীরে প্রচণ্ড মারধরের চিহ্ন রয়েছে। এরপর ১৭ জুন নিহতের স্ত্রী হত্যা মামলা দায়ের করলে মামলার তদন্তভার পিবিআইয়ের হাতে যায়।
তদন্তে উঠে আসে, হেরোইন জব্দের আড়ালে মাদক আত্মসাতের পরিকল্পনা করেন ইসাহাক ও অভিযানে অংশ নেওয়া কয়েকজন পুলিশ সদস্য। বিচারিক আদালতে ইসাহাকের স্বীকারোক্তিতে উল্লেখ করা হয়, রফিকুলকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন গোদাগাড়ী থানার তিন এসআই এবং দুই কনস্টেবল। একই সঙ্গে ১শ গ্রাম মাদক দেখিয়ে মামলায় জামালকে আসামি করা হয় এবং রফিকুলকে পালাতক দেখানো হয়।
মামলার নথি ও প্রাথমিক প্রমাণ সত্ত্বেও পাঁচ বছরেও চার্জশিট জমা না হওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে তদন্তের স্বচ্ছতা নিয়ে। পরিবার বলছে, তদন্তের নামে সময় নষ্ট করা হচ্ছে। তদন্ত কর্মকর্তার বদলি এবং দীর্ঘসূত্রতা দেখে তাদের আশঙ্কা—এটি পরিকল্পিতভাবে মামলা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা।
নিহত রফিকুলের পরিবার বলছে, দরিদ্র হওয়ায় পুলিশের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে ভয় পাচ্ছেন তারা। তাদের দাবি, বাস্তব তদন্তের বদলে ভিন্ন গল্প তৈরি করে নির্দোষ মানুষকে জড়িয়ে মামলা দীর্ঘায়িত করা হচ্ছে। মানবাধিকারকর্মীরা মনে করেন, পুলিশ জড়িত থাকলে তদন্তে বাধা আসে এবং বিচার প্রক্রিয়া ঝুলে থাকে। আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, স্বীকারোক্তি, ময়নাতদন্ত ও প্রাথমিক প্রমাণ থাকা অবস্থায় চার্জশিট দাখিল না করা অভিযুক্তদের আইনি সুরক্ষা দেওয়ার শামিল।
তদন্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তিনি মাত্র ছয় মাস ধরে মামলার দায়িত্বে আছেন এবং তদন্ত চলমান। তবে পরিবারের অভিযোগ, তদন্তের দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই।
স্থানীয়দের প্রশ্ন—এত প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও রফিকুলের হত্যার বিচার কি অদৃশ্য শক্তির কাছে আটকে থাকবে? নাকি পাঁচ বছর পরও আটকে থাকা চার্জশিট বাস্তব বিচার পাওয়ার পথে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে?
রাজশাহীতে হেরোইন নিয়ে অভিযানে মৃত্যু: পাঁচ বছরেও চার্জশিটহীন পুলিশি হত্যা মামলা স্থবির
রাজশাহী প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর সীমান্তবর্তী গোদাগাড়ীতে হেরোইন আত্মসাতের ঘটনা ঘিরে বাহক রফিকুল ইসলাম হত্যার পাঁচ বছর পেরিয়ে গেছে। মামলায় পুলিশের পাঁচ সদস্যের নাম আসামি হিসেবে উঠে এলেও এখনো চার্জশিট আদালতে জমা হয়নি। পরিবার বলছে, প্রভাবশালী পুলিশ সদস্যদের বাঁচাতে তদন্ত প্রক্রিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে ধীরগতিতে চলছে।
ঘটনাটি ২০২০ সালের ২১ মার্চ রাতে। স্থানীয় ব্যক্তি ইসাহাক আলীকে নিয়ে পুলিশের একটি বিশেষ দল সীমান্ত এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযানে যায়। সেখানে হেরোইন নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন বাহক রফিকুল ও মাদক ব্যবসায়ী জামাল। ধস্তাধস্তির সময় রফিকুলকে নির্মমভাবে মারধর করা হয়। পরে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ।
পরদিন পদ্মার চরে রফিকুলের মরদেহ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। প্রথমে এটিকে বজ্রপাতজনিত মৃত্যু হিসেবে অপমৃত্যু মামলা নথিভুক্ত করা হয়। তবে ময়নাতদন্তে দেখা যায়, রফিকুলের শরীরে প্রচণ্ড মারধরের চিহ্ন রয়েছে। এরপর ১৭ জুন নিহতের স্ত্রী হত্যা মামলা দায়ের করলে মামলার তদন্তভার পিবিআইয়ের হাতে যায়।
তদন্তে উঠে আসে, হেরোইন জব্দের আড়ালে মাদক আত্মসাতের পরিকল্পনা করেন ইসাহাক ও অভিযানে অংশ নেওয়া কয়েকজন পুলিশ সদস্য। বিচারিক আদালতে ইসাহাকের স্বীকারোক্তিতে উল্লেখ করা হয়, রফিকুলকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন গোদাগাড়ী থানার তিন এসআই এবং দুই কনস্টেবল। একই সঙ্গে ১শ গ্রাম মাদক দেখিয়ে মামলায় জামালকে আসামি করা হয় এবং রফিকুলকে পালাতক দেখানো হয়।
মামলার নথি ও প্রাথমিক প্রমাণ সত্ত্বেও পাঁচ বছরেও চার্জশিট জমা না হওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে তদন্তের স্বচ্ছতা নিয়ে। পরিবার বলছে, তদন্তের নামে সময় নষ্ট করা হচ্ছে। তদন্ত কর্মকর্তার বদলি এবং দীর্ঘসূত্রতা দেখে তাদের আশঙ্কা—এটি পরিকল্পিতভাবে মামলা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা।
নিহত রফিকুলের পরিবার বলছে, দরিদ্র হওয়ায় পুলিশের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে ভয় পাচ্ছেন তারা। তাদের দাবি, বাস্তব তদন্তের বদলে ভিন্ন গল্প তৈরি করে নির্দোষ মানুষকে জড়িয়ে মামলা দীর্ঘায়িত করা হচ্ছে। মানবাধিকারকর্মীরা মনে করেন, পুলিশ জড়িত থাকলে তদন্তে বাধা আসে এবং বিচার প্রক্রিয়া ঝুলে থাকে। আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, স্বীকারোক্তি, ময়নাতদন্ত ও প্রাথমিক প্রমাণ থাকা অবস্থায় চার্জশিট দাখিল না করা অভিযুক্তদের আইনি সুরক্ষা দেওয়ার শামিল।
তদন্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তিনি মাত্র ছয় মাস ধরে মামলার দায়িত্বে আছেন এবং তদন্ত চলমান। তবে পরিবারের অভিযোগ, তদন্তের দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই।
স্থানীয়দের প্রশ্ন—এত প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও রফিকুলের হত্যার বিচার কি অদৃশ্য শক্তির কাছে আটকে থাকবে? নাকি পাঁচ বছর পরও আটকে থাকা চার্জশিট বাস্তব বিচার পাওয়ার পথে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে?