পরপর ভূমিকম্পে উদ্বিগ্ন মানুষ, ভূকম্পনের কেন্দ্র নরসিংদী

মাহাবুল ইসলাম পরাগ, গাজীপুর রিপোর্টারঃ

দেশজুড়ে আবারও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) ভোরে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ভূকম্পনে কেঁপে ওঠে। ভোর ৬টা ১৪ মিনিট ৪৪ সেকেন্ডে আঘাত হানা ভূমিকম্পটির মাত্রা রিখটার স্কেলে ৪ দশমিক ১ হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। মাত্র দুদিনের ব্যবধানে পরপর ভূকম্পন হওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

প্রাথমিক ভূমিকম্প বিশ্লেষণে জানা যায়, ভূমিকম্পটির কেন্দ্রস্থল ছিল নরসিংদীর শিবপুর এলাকায়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূকম্পন পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র। গবেষণা প্রতিষ্ঠানের তথ্য মতে, ভূমিকম্পটির গভীরতা ছিল প্রায় ৩০ কিলোমিটার। আন্তর্জাতিক সিসমোলজি বিশ্লেষণে ভূকম্পনের অবস্থান গাজীপুরের টঙ্গী থেকে প্রায় ৩৩ কিলোমিটার পূর্ব-উত্তরপূর্বে এবং নরসিংদী শহর থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটার উত্তরে নির্ধারণ করা হয়।

ভোরের সময়ে হওয়ায় রাজধানীর বহু মানুষের ঘুম ভূকম্পনের ঝাঁকুনিতে ভেঙে যায়। ঢাকা ছাড়াও নারায়ণগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, লক্ষীপুরসহ কয়েকটি জেলায় লোকজন ভূমিকম্প অনুভব করেছেন বলে জানা যায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বহু ব্যবহারকারী জানান, সকালে হঠাৎ বিছানা কেঁপে ওঠায় তারা ঘুম থেকে জেগে উঠেন। কেউ কেউ ঘরের আলমারি, দরজা বা ফ্যান নড়াচড়া লক্ষ্য করেছেন বলেও জানিয়েছেন।

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের ভূকম্পন ঘনত্ব বেড়ে যাওয়ার কারণে সচেতনতা তৈরির পাশাপাশি প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছেন গবেষকরা। ভূ-তাত্ত্বিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বাংলাদেশের পূর্ব ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল ভূকম্পনের ঝুঁকি জোনে রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, অভ্যন্তরীণ মৃদু কম্পন প্রাকৃতিক চাপ নির্গমনের ফল হতে পারে, যা বড় ভূমিকম্পের ঝুঁকি হ্রাস করে। তবে পরপর ভূমিকম্প হওয়ায় ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ জরুরি।

ভূকম্পন অনুভূত হওয়ার পর অনেকেই বাইরে বের হয়ে নিরাপদ স্থানে অবস্থান করেন। অনেক ভবনে জরুরি সিঁড়িপথ দিয়ে নামতে দেখা গেছে বাসিন্দাদের। যদিও এটি তুলনামূলক কমমাত্রার ভূমিকম্প ছিল, তবুও সতর্কতা অবলম্বন করাকে বিশেষজ্ঞরা জরুরি বলে মনে করেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভূমিকম্প একটি অপ্রত্যাশিত প্রাকৃতিক ঘটনা। তবে সচেতনতা, প্রস্তুতি এবং নিরাপত্তার নিয়ম জানা থাকলে জীবন ও সম্পদের ক্ষতি অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। বিভিন্ন সরকারি সংস্থা ভূমিকম্প সচেতনতা কর্মসূচি পরিচালনা করছে এবং ভবন নির্মাণে দুর্যোগ সহনশীল স্থাপত্য ব্যবস্থার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে।

পরপর ভূমিকম্প হওয়ায় দেশের মানুষ আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজনে নিকটস্থ সুরক্ষা স্থানে অবস্থান ও সরকারি নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানান সংশ্লিষ্টরা।

পরপর ভূমিকম্পে উদ্বিগ্ন মানুষ, ভূকম্পনের কেন্দ্র নরসিংদী

ডিসেম্বর ৪, ২০২৫

মাহাবুল ইসলাম পরাগ, গাজীপুর রিপোর্টারঃ

দেশজুড়ে আবারও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) ভোরে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ভূকম্পনে কেঁপে ওঠে। ভোর ৬টা ১৪ মিনিট ৪৪ সেকেন্ডে আঘাত হানা ভূমিকম্পটির মাত্রা রিখটার স্কেলে ৪ দশমিক ১ হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। মাত্র দুদিনের ব্যবধানে পরপর ভূকম্পন হওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

প্রাথমিক ভূমিকম্প বিশ্লেষণে জানা যায়, ভূমিকম্পটির কেন্দ্রস্থল ছিল নরসিংদীর শিবপুর এলাকায়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূকম্পন পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র। গবেষণা প্রতিষ্ঠানের তথ্য মতে, ভূমিকম্পটির গভীরতা ছিল প্রায় ৩০ কিলোমিটার। আন্তর্জাতিক সিসমোলজি বিশ্লেষণে ভূকম্পনের অবস্থান গাজীপুরের টঙ্গী থেকে প্রায় ৩৩ কিলোমিটার পূর্ব-উত্তরপূর্বে এবং নরসিংদী শহর থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটার উত্তরে নির্ধারণ করা হয়।

ভোরের সময়ে হওয়ায় রাজধানীর বহু মানুষের ঘুম ভূকম্পনের ঝাঁকুনিতে ভেঙে যায়। ঢাকা ছাড়াও নারায়ণগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, লক্ষীপুরসহ কয়েকটি জেলায় লোকজন ভূমিকম্প অনুভব করেছেন বলে জানা যায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বহু ব্যবহারকারী জানান, সকালে হঠাৎ বিছানা কেঁপে ওঠায় তারা ঘুম থেকে জেগে উঠেন। কেউ কেউ ঘরের আলমারি, দরজা বা ফ্যান নড়াচড়া লক্ষ্য করেছেন বলেও জানিয়েছেন।

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের ভূকম্পন ঘনত্ব বেড়ে যাওয়ার কারণে সচেতনতা তৈরির পাশাপাশি প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছেন গবেষকরা। ভূ-তাত্ত্বিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বাংলাদেশের পূর্ব ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল ভূকম্পনের ঝুঁকি জোনে রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, অভ্যন্তরীণ মৃদু কম্পন প্রাকৃতিক চাপ নির্গমনের ফল হতে পারে, যা বড় ভূমিকম্পের ঝুঁকি হ্রাস করে। তবে পরপর ভূমিকম্প হওয়ায় ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ জরুরি।

ভূকম্পন অনুভূত হওয়ার পর অনেকেই বাইরে বের হয়ে নিরাপদ স্থানে অবস্থান করেন। অনেক ভবনে জরুরি সিঁড়িপথ দিয়ে নামতে দেখা গেছে বাসিন্দাদের। যদিও এটি তুলনামূলক কমমাত্রার ভূমিকম্প ছিল, তবুও সতর্কতা অবলম্বন করাকে বিশেষজ্ঞরা জরুরি বলে মনে করেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভূমিকম্প একটি অপ্রত্যাশিত প্রাকৃতিক ঘটনা। তবে সচেতনতা, প্রস্তুতি এবং নিরাপত্তার নিয়ম জানা থাকলে জীবন ও সম্পদের ক্ষতি অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। বিভিন্ন সরকারি সংস্থা ভূমিকম্প সচেতনতা কর্মসূচি পরিচালনা করছে এবং ভবন নির্মাণে দুর্যোগ সহনশীল স্থাপত্য ব্যবস্থার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে।

পরপর ভূমিকম্প হওয়ায় দেশের মানুষ আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজনে নিকটস্থ সুরক্ষা স্থানে অবস্থান ও সরকারি নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানান সংশ্লিষ্টরা।